আল্লাহর কাছে জ্ঞান চাওয়ার জন্য (Rabbi Zidni Ilma) ‘রাব্বি যিদনী ইলমা’ “হে আমার প্রতিপালক, আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করে দাও” দোয়াটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কুরআন তিলাওয়াতের আগে দুরুদ পড়া বা “রাব্বি যিদনী ইলমা” ইত্যাদি দোয়া পাঠ করা সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত নয়। তাই এগুলোকে কুরআন তেলাওয়াত করার পূর্বে নিয়ম বানিয়ে সবসময় পাঠ করা ঠিক নয়। তবে জ্ঞান বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে এই দোয়া বেশি বেশি আমল করুন। নিম্নে Rabbi Zidni Ilma full dua এবং ফজিলত তুলেধরা হলো।
আরো পড়ুন: রাব্বি ইন্নি লিমা আনজালতা, জীবনের নিরাপত্তা, কর্ম সংস্থান, রিজিকের সমাধান ও বিয়ে সিদ্ধান্তের দুআ
Rabbi Zidni Ilma full dua (রাব্বি জিদনি ইলমা) মূল আরবি :
رَبِّ زِدْنِي عِلْمًا رَبِّ اشْرَحْ لِي صَدْرِي* وَيَسِّرْ لِي أَمْرِي* وَاحْلُلْ عُقْدَةً مِّن لِّسَانِي * يَفْقَهُوا قَوْلِي
Contents
Rabbi Zidni Ilma full dua (রাব্বি জিদনি ইলমা) মূল আরবি :রাব্বি জিদনি ইলমা বাংলা উচ্চারণ:Rabbi Zidni Ilma full dua in Englishরাব্বি জিদনি ইলমা বাংলা অর্থ:Rabbi Zidni Ilma full dua English Translationকুরআন ও হাদিসের আলোকে (Rabbi Zidni Ilma)কুরআনের আলোকে রাব্বি জিদনি ইলমা দোয়ার ফজিলত:আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা কুরতুবি রহ: বলেনহাদিসের আলোকে রাব্বি জিদনি ইলমা (Rabbi Zidni Ilma) দোয়ার ফজিলত :
রাব্বি জিদনি ইলমা বাংলা উচ্চারণ:
রাব্বি জিদনী ইলমা। রাব্বিস রাহলি সাদরী। ওয়া ইয়াছ ছিরলী আমরী ওয়াহলুল ‘উকদাতাম মিল্লিছানী।ইয়াফ কাহূ কাওলি।
আরো পড়ুন: Azan Dua বাংলা, আরবি, ও ইংরেজি উচ্চারণ, অর্থ এবং ফজিলত
Rabbi Zidni Ilma full dua in English
Rabbi Zidani Ilma.Rabbis Rahli Sadri.Wa Yach Chirli Amri Wahlul ‘Uqdatam Millichani.Yaf Kahu Kawli.
রাব্বি জিদনি ইলমা বাংলা অর্থ:
হে আমার প্রভু, আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করুন, হে আমার প্রভু, আমার জন্য আমার বক্ষ প্রশস্ত করুন * এবং আমার জন্য আমার ব্যাপার সহজ করুন * এবং আমার জিহ্বা থেকে গিঁট খুলে দিন * যাতে তারা বুঝতে পারে।
Rabbi Zidni Ilma full dua English Translation
My Lord, increase my knowledge, my Lord, expand my chest for me * and ease my affair for me * and untie the knots from my tongue * that they may understand it.
আরো পড়ুন: ইসমে আজম কি ও এর ফজিলত
কুরআন ও হাদিসের আলোকে (Rabbi Zidni Ilma)
কুরআনের আলোকে রাব্বি জিদনি ইলমা দোয়ার ফজিলত:
২৫) قَالَ رَبِّ ٱشْرَحْ لِى صَدْرِى
২৬) وَيَسِّرْ لِىٓ أَمْرِى
২৭) وَٱحْلُلْ عُقْدَةً مِّن لِّسَانِى
২৮) يَفْقَهُوا۟ قَوْلِى
২৫) মূসা বললেনঃ হে আমার পালনকর্তা আমার বক্ষ প্রশস্ত করে দিন।
২৬) এবং আমার কাজ সহজ করে দিন।
২৭) এবং আমার জিহবা থেকে জড়তা দূর করে দিন।
২৮) যাতে তারা আমার কথা বুঝতে পারে। (সূরা ত্বহা, আয়াত : ২৫-২৮)।
ইলম মহান আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে মানবজাতির জন্য অনুগ্রহ ও মহাদান। মানবজাতির শ্রেষ্ঠত্বের মূলেই রয়েছে জ্ঞান তথা ইলম। শুধু মানবজাতি বাকশক্তিসম্পন্ন, তারা কথা বলতে পারে, যেকোনো বিষয় সাবলীলভাবে বর্ণনা করতে পারে। একজনের কথা অপরজন স্বাভাবিকভাবে বুঝতে পারে। মানুষের এই বিস্ময়কর ক্ষমতা মহান আল্লাহ প্রদত্ত মহা নিয়ামত। তিনি মানুষকে জ্ঞানবান করে সৃষ্টি করেছেন, তাঁর স্মরণশক্তিকে প্রখর করে দিয়েছেন। স্মৃতিশক্তির বিবেচনায় মানুষ অজানাকে জেনে স্মরণ রাখতে পারে। কদাচিৎ স্মৃতিশক্তির দুর্বলতা হেতু মানুষ স্মরণযোগ্য বিষয়কেও ভুলে যায়। মানুষের এ ভুলে যাওয়ার প্রবণতাও এক ধরনের আপদ, আরবি প্রবাদে আছে, ‘আফাতুল ইলমি আন নিসইয়ান’ জ্ঞানের বিপদ ভুলে যাওয়া। মানুষকে জ্ঞানের এ আপদ থেকে পরিত্রাণ পেতে দোয়া শিক্ষা দেয়ার জন্য রাসূল সা:কে উপলক্ষ করে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেন, ‘ (বলো) হে আমার প্রভু, আমার ইলম বৃদ্ধি করে দাও’ (সূরা ত্বহা, আয়াত-১১৪)।
আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা কুরতুবি রহ: বলেন
ইলমের চেয়ে অন্য কোনো আমল যদি আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয় হতো তবে তিনি নবী সা:কে সেটা বৃদ্ধির জন্যই দোয়া করতে নির্দেশ দিতেন। কুরআনে কারিমে নবী সা:কে ইলম ছাড়া অন্য কোনো জিনিস বৃদ্ধির জন্য দোয়া করতে নির্দেশ দেয়া হয়নি।
ইলমের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তার প্রতি উৎসাহ দিয়ে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং যাদেরকে ইলম দান করা হয়েছে আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে মর্যাদায় উন্নত করবেন’ (সূরা মুজাদালাহ, আয়াত-১১)।
তিনি আরো ইরশাদ করেন, ‘মুমিনদের সবার একসাথে অভিযানে বের হওয়া সঙ্গত নয়, তাদের প্রত্যেক দলের এক অংশ বহির্গত হয় না কেন, যাতে তারা দ্বীন সম্বন্ধে জ্ঞানানুশীলন করতে পারে এবং তাদের সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পারে, যখন তারা তাদের কাছে ফিরে আসবে। যাতে তারা সতর্ক হয়’ (সূরা তাওবা, আয়াত-১২২)।
আরো পড়ুন: হুমাযাহ ও লুমাযাহ কারা? তাদের জন্য কি শাস্তি রয়েছে
হাদিসের আলোকে রাব্বি জিদনি ইলমা (Rabbi Zidni Ilma) দোয়ার ফজিলত :
রাসূল সা: তাঁর উম্মতদেরকে দোয়া করার পদ্ধতি সম্পর্কে বর্ণনা করে ইরশাদ করেন, ‘তোমরা আল্লাহর কাছে এভাবে দোয়া করবে, হে আল্লাহ আপনি যা সহজ করে দিন তা ব্যতীত কোনো কিছুই সহজ নেই। আর আপনি চাইলে পেরেশানিযুক্ত কাজও সহজ করে দিন’ (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস-৯৭৪)।
হজরত সাফওয়ান ইবনে আসসাল রা: বলেন, আমি নবী সা:-এর কাছে এলাম। তখন তিনি মসজিদে বসেছিলেন। আমি তাঁকে বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ, আমি এসেছি ইলম শিক্ষা করার জন্য। তিনি বললেন, ‘তালেবে ইলমকে মারহাবা। নিশ্চয় তালেবে ইলমকে ফিরিশতারা বেষ্টন করে রাখে এবং তাদের ডানা দিয়ে তাকে ছায়া দিতে থাকে। অতঃপর তারা সারিবদ্ধভাবে প্রথম আসমান পর্যন্ত মিলে মিলে দাঁড়িয়ে যায়। এসব কিছু তারা সে যা অন্বেষণ করছে তার ভালোবাসায় করে’ (আখলাকুল উলামা, আর্জুরি ১/৩৭; তবারানি কাবির, হাদি-৭৩৪৭; মাজমাউজ জাওয়ায়েদ, হাদিস-৫৫০)।
প্রখ্যাত মুফাসসির আল্লামা কুরতুবি রহ: বলেন, ‘কুরআনের এই আয়াতটি ইলম অন্বেষণ ওয়াজিব হওয়ার ব্যাপারে একটি বড় দলিল। তিনি আরো বলেন, ইলম অন্বেষণ করা এমন মহা সম্মান ও মর্যাদার বিষয়, অন্য কোনো আমল যার সমকক্ষ হতে পারে না’ (তাফসিরে কুরতুুবি ৮/২৬৬, ২৬৮)।
আরো পড়ুন: সায়্যিদুল ইস্তেগফার সব চেয়ে শ্রেষ্ট ইস্তেগফার এবং আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাওয়ার শ্রেষ্ঠ দুআ