নামাজের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় একটি নির্দিষ্ট সময়ে ও স্থানে দোয়া পাঠ করাকে কুনূতের দোয়া বলা হয়। বেতর নামাজে কুনূতের দোয়া পাঠ করার বিষয়টি আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] থেকে নির্ভরযোগ্য পন্থায় সাব্যস্ত হয় নি। তবে তিনি আল হাসান বিন আলী [রাদিয়াল্লাহু আনহুমা] কে বেতর নামাজের কুনূতে পাঠ করার জন্য এই দোয়াটি শিখিয়ে দিয়েছেন। তাই মুসলিম ব্যক্তির উচিত যে, সে যেন বেতর নামাজে কুনূতের এই দোয়াটি কোনো কোনো সময় পাঠ করে। নিম্নে Dua qunoot bangla উচ্চারণ ও ফজিলত তুলে ধরা হলো।
দোয়া কুনুত আরবী
اَللَّهُمَّ اِنَّا نَسْتَعِيْنُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنُؤْمِنُ بِكَ وَنَتَوَكَّلُ عَلَيْكَ وَنُثْنِىْ عَلَيْكَ الْخَيْرَ وَنَشْكُرُكَ وَلاَ نَكْفُرُكَ وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَّفْجُرُكَ-اَللَّهُمَّ اِيَّاكَ نَعْبُدُ وَلَكَ نُصَلِّىْ وَنَسْجُدُ وَاِلَيْكَ نَسْعَى وَنَحْفِدُ وَنَرْجُوْ رَحْمَتَكَ وَنَخْشَى عَذَابَكَ اِنَّ عَذَابَكَ بِالْكُفَّارِ مُلْحِقٌ
Dua qunoot bangla – দোয়া কুনুত বাংলা উচ্চারণ
আল্লাহুম্মা ইন্না নাস্তাঈ’নুকা, ওয়া নাস্তাগ্ফিরুকা, ওয়া নু’’মিনু বিকা, ওয়া নাতাওয়াক্কালু ‘আলাইকা, ওয়া নুছনী আলাইকাল খাইর। ওয়া নাশ কুরুকা, ওয়ালা নাকফুরুকা, ওয়া নাখলাউ’, ওয়া নাতরুকু মাঁই ইয়াফজুরুকা। আল্লাহুম্মা ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া লাকানুসল্লী, ওয়া নাসজুদু, ওয়া ইলাইকা নাস’আ, – ওয়া নাহফিদু, ওয়া নারজু রাহমাতাকা, ওয়া নাখশা – আযাবাকা, ইন্না আযাবাকা বিল কুফ্ফারি মুলহিক্ব।
Dua E Qunoot in English
Allah humma inna nasta-eenuka onastaghfiruka wa nu’minu bika wanatawakkalu alaika wanusni alaikal khair, wa nashkuruka wala nakhfuruka wanakhla-uo wanatruku mai-yafjuruka. Allah humma iyyaka na’budu walaka nusalli wanasjudu wailaika nas aaa wanahfizu wanarju rahma taka wa nakhshaa azaabaka inna azaabaka bil kuffari mulhikun.
দোয়া কুনুত বাংলা অর্থ
হে আল্লাহ আমরা তোমারই সাহায্য চাই, তোমারই নিকট ক্ষমা চাই, তোমারই প্রতি ঈমান রাখি, তোমারই ওপর ভরসা করি এবং সকল, মঙ্গল তোমারই দিকে ন্যস্ত করি। আমরা তোমার কৃতজ্ঞ হয়ে চলি অকৃতজ্ঞ হই না, এবং যারা তোমার অবাধ্য হয় তাদের থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করে তাদেরকে পরিত্যাগ করি। হে আল্লাহ আমরা তোমারই দাসত্ব করি তোমারই জন্য নামায পড়ি এবং তোমাকেই সিজদাহ করি, আমরা তোমারই দিকে দৌড়াই ও এগিয়ে চলি। আমরা তোমারই রহমত, আশা করি এবং তোমার আযাবকে ভয় করি আর তোমার আযাবতো কাফেরদের জন্যই র্নিধারিত।
Dua Qunoot Ar Fojilat দোয়া কুনুতের ফজিলত ও হাদিস
আবুল হাওরা (রহঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, হাসান ইবনু ’আলী (রাঃ) বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে কয়েকটি বাক্য শিখিয়ে দিয়েছেন। এগুলো আমি বিতরের নামাযে পাঠ করে থাকিঃ
“اَللَّهُمَّ اهْدِنِيْ فِيْمَنْ هَدَيْتَ، وَعَافِنِيْ فِيْمَنْ عَافَيْتَ، وَتَوَلَّنِيْ فِيْمَنْ تَوَلَّيْتَ، وَبَارِكْ لِيْ فِيْمَا أَعْطَيْتَ، وَقِنِيْ شَرَّمَا قْضَيْتَ؛ إِنَّكَ تَقْضِىْ وَلاَ يُقْضَى عَلَيْكَ، وَإنَّهُ لاَ يَذِلُّ مَنْ وَّالَيْتَ، وَلاَ يَعِزُّ مَنْ عَادَيْتَ، تَبَارَكْتَ رَبَّنَا وَتَعَالَيْتَ”.
“হে আল্লাহ! যাদেরকে তুমি হিদায়াত করেছো আমাকেও তাদের সাথে হিদায়াত কর, যাদের প্রতি উদারতা দেখিয়েছ তুমি তাদের সাথে আমার প্রতিও উদারতা দেখাও। তুমি যাদের অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেছ তাদের সাথে আমার অভিভাবকত্বও গ্রহণ কর। তুমি আমাকে যা দান করেছ তার মধ্যে বারকাত দাও। তোমার নির্ধারিত খারাবি হতে আমাকে রক্ষা কর। কেননা তুমিই নির্দেশ দিতে পার, তোমার উপর কারো নির্দেশ চলে না। যাকে তুমি বন্ধু ভেবেছ সে কখনও অপমানিত হয় না। তুমি কল্যাণময়, তুমি সুউচ্চ”। সহীহ। ইরওয়া— (৪২৯), মিশকাত— (১২৭৩), তা’লীক আলা-ইবনু খুজাইমাহ– (১০৯৫), সহীহ আবু দাউদ- (১৪২৫)।
এ অনুচ্ছেদে আলী (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ এটি হাসান হাদীস। আবুল হাওরার সূত্র ব্যতীত অপর কোন সূত্রে আমরা এ হাদীসটি জানতে পারিনি। আবুল হাওরার নাম বার’আহ ইবনু শাইবান।
বিতরে দু’আ কুনুতের ব্যাপারে উল্লেখিত হাদীসের চেয়ে বেশি ভাল হাদীস আমাদের জানা নেই। বিতরের কুনুতের ব্যাপারে আলিমদের মধ্যে মতের অমিল রয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেছেন, সারা বছর (প্রতি রাতে) বিতরের নামাযে কুনুত পাঠ করতে হবে। তিনি রুকূ করার পূর্বে কুনূত পাঠ করা পছন্দ করেছেন। কিছু বিশেষজ্ঞের এটাই মত। সুফিয়ান সাওরী, ইবনুল মুবারাক, ইসহাক এবং কুফাবাসীগণও একইরকম মত দিয়েছেন। আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি কেবল রামাযান মাসের দ্বিতীয়ার্ধেই রুকূ করার পর কুনূত পাঠ করতেন, অন্য সময়ে কুনুত পাঠ করতেন না। কিছু বিশেষজ্ঞ এ মত দিয়েছেন। ইমাম শাফিঈ এবং আহমাদও এ কথাই বলেছেন।